একটি দল বা গুচ্ছ নিরূপিত হয় ভৌগলিক সমাবেশ বা কেন্দ্রীকরণ হিসাবে(একটি মহানগরী/ শহর / কিছু সংলগ্ন গ্রামসমূহ এবং তাদের সন্নিহিত অঞ্চলসমূহ) যা কাছাকাছি একই ধরণের উপাদানের দ্রব্য উপন্ন করছেন এবং মুখোমুখি হচ্ছেন যৌথ সুযোগ সুবিধার ও আশঙ্কার। একটি কারুশিল্পী দল নিরূপিত হয় ভৌগলিক দিক থেকে কেন্দ্রীভূত (প্রধানত গ্রামগুলিতে/ছোট শহরগুলিতে) পরিবার পরিজনের দল যারা হস্তশিল্পের / হস্ত চালিত তাঁতের উপাদিত দ্রব্য সমূহ উপাদন করছেন। একটি বৈশিষ্ট্য সূচক দলে এইরকম উপাদকরা প্রায়ই ঐতিহ্যবাহী সম্প্রদায়ের অন্তর্ভূক্ত হন, যাহারা বংশানুক্রমে স্বীকৃত দ্রব্য উপাদন করছেন। বস্তুত, অনেক কারুশিল্পী দল হলেন শতাধিক বছরের পুরনো কারুশিল্পী।কামারপাড়া গোষ্ঠী সম্পর্কে :-কামারপাড়া গোষ্ঠী পশ্চিম বঙ্গ রাজ্যের কলকাতা জেলাতে পড়ে।বাবনান গোষ্ঠী 700 এর বেশী কারিগর গঠন করতে সক্ষম হয়েছে এবং 60 টি স্বয়ম্ভর গোষ্ঠী এই শক্তিশালী কর্মশক্তিকে সহায়তা দিচ্ছেন। চলন শক্তির গতিবেগ দিনে দিনে বৃদ্ধি পাচ্ছে। ঘাস, পাতা, নলখাগড়া, তন্তু :- পশ্চিম বাংলার হুগলীতে উত্তর ও দক্ষিণ প্রান্তে ঘাস, পাতা, নলখাগড়া, তন্তুর বিভিন্ন অংশ থেকে অসংখ্য দ্রব্য তৈরী হয় যার মধ্যে ভারতীয় ও সিংহলী তাল গাছের পাতা ও তন্তু বা আঁশ দিয়ে তৈরী বিভিন্ন নকশার ঝুড়ি এবং খেজুর গাছের কান্ড থেকে তৈরী মাদুর বা তলাচিও আছে। তাল গাছের নরম পাতাগুলি গাছের বাকল থেকে আলাদা করা হয় এবং তাদের উপর একটা ধারাবাহিক বাকলকে গুটিয়ে ফেলে একসঙ্গে জোড়া হয় তারপর সেটাকে একটা ফিতের মত ভাঁজ করা হয় এবং পাতার একটা সরু টুকরো দিয়ে বাঁধা হয় বিভিন্ন ব্যাবধানে বিভিন্ন স্তরকে সংযোগ করার জন্য, একটা সমান এবং ছন্দময় নকশা এইভাবে পাওয়া যায় মনোরম রং সম্বলিত সূক্ষ্ম বয়ন বিন্যাসে বিভিন্ন ধরণের দ্রব্য অন্তর্ভুক্ত করতে যেমন – সুটকেস, বাক্স, থলে, ঝুড়ি, পর্দা, চিক, মাদুর বা চাটাই, গ্লাস ধারক, ফুলদানি, টুপি, সুন্দর চালনি, হাত পাখা, চৌকোনা মাদুর এবং অলংকার রাখার বাক্স। তাল গাছের নরম পাতা থেকে প্রাপ্ত বিভিন্ন জিনিস যেগুলো থেকে পাতার শিরা সরানো হয়েছে এবং তারপর রোদে শুকানো হয়েছে অন্তর্ভুক্ত করে থলে, রাতের খাবারের আধার এবং সৌন্দর্য-বর্ধক হাতে ধরা ভাঁজ করা যায় এমন পাখা যার মধ্যে 37 থেকে 56 টি ফলা আছে। ফলাগুলির এর উপরে অবস্থিত একটা ছিদ্র দিয়ে ঢোকানো একটা তামার তার দিয়ে একসঙ্গে বাঁধা আছে এবং একসঙ্গে সেলাই করা আছে যাতে পাখার মত ছড়িয়ে যায়। পাখাগুলি দৃশ্যত: আকর্ষনীয় করে তোলা হয় ফলার উপরে পুষ্পসংক্রান্ত শৈল্পিক নকশা অঙ্কন করে। ঘাস পাতা ও কান্ড বুনন কেরালার দক্ষিণাংশে এখন সমৃদ্ধজনক শিল্প কৌশল এবং এই দিয়ে সুটকেস, থলে, টুপি তৈরী করা হয় বর্তমানে ভারতীয় ও আন্তর্জাতিক বাজারের জন্য। নলখাগড়া হল শক্ত ও ফাঁপা কান্ড ওয়ালা ঘাস এবং এটা দেখতে বাঁশ এর মত। এটা খুব মজবুত জিনিস এবং নলখাগড়ার মাদুর বা চাটাই দেওয়াল হিসাবে ব্যাবহৃত হয় কাঠামো এবং ছাদের জন্য। নলখাগড়া প্রথমে লম্বালম্বিভাবে ভেঙে টুকরো করা হয় এবং বুনন এর আগে চাঁছা হয় ও রেখা বা শিরা তোলা ভাবে বুনে মাদুর বা চাটাই করা হয়। একটা কোনার থেকে বুনে এগুলো কে তৈরী করা হয় এবং বিনুনী করা হয় বা বোনা হয় তির্যক ভাবে। লম্বা সরু ফালি মধ্যিখানে ভাঁজ করা হয় এবং আর একটা সরু ফালি আড়াআড়ি ভাবে ঢোকানো হয় , যেটা পরের দিকে ভাঁজ করা হয় এবং পরের সরু ফালি পুনরায় তির্যকভাবে ঢোকানো হয় এবং এইভাবে করা হয়। ধার থেকে মাদুরের তির্যক সরু ফালির ভাঁজ পড়া অংশ। নলখাগড়াও ব্যবহৃত হয় মজবুত ঝুড়ি তৈরীর জন্য। কাঁচামাল:-পশ্চিম বাংলার গ্রামগুলি ঘাস, পাতা, নলখাগড়া, তন্তুতে (ছিবড়ে জাতীয় গাছ) ভর্ত্তি। ঝুড়ি ও ঐ সম্পর্কিত দ্রব্যের জন্য কাঁচা মালের মুখ্য উস হচ্ছে ঘাস। অন্যান্য কাঁচামাল যেমন – বাঁশ, বেত, ঘাস, আঁশ এবং নলখাগড়াও ব্যবহৃত হয় ঝুড়ি, বেড়া বা ঘর ছাওয়ার কাজে, দড়ি, মাদুর এবং অন্যান্য অনেক কাজে। প্রক্রিয়া:-পাটের আঁশ পাওয়া যায় পাট গাছের কান্ড থেকে এবং বাইরের দিকে যে ফিতার মত ছাল থাকে সেখান থেকে। জলে ভিজিয়ে পাট পচিয়ে প্রথমে আঁশ বের করা হয়। পাট পচান পদ্ধতি হল, পাট গাছের কান্ডগুলি একসঙ্গে বেঁধে গোছা করে অল্প এবং প্রবাহিত জলে ডুবান হয়। পাট পচানো দুই ধরনের : কান্ড ও ফিতা। পচানোর পরে ছাড়ানো আরম্ভ হয়। মহিলারা এবং বাচ্চারা সাধারণত: এই কাজ করে। ছাড়ানো পদ্ধতিতে , আঁশ নয় এমন অবাঞ্ছিত জিনিসগুলি বাদ দিয়ে দেওয়া হয়, তারপর অন্যান্য লোকেরা জলে নেমে পড়ে কান্ডগুলিকে আঁকড়ে ধরে এবং ঐ কান্ডগুলি থেকে আঁশ ছাড়িয়ে নেয়।কায়দা করা ব্যাগ ও বিক্রয়ের জন্য সাহায্যপ্রাপ্ত দ্রব্য তৈরী করার জন্য পাটের থলি ব্যবহার করা হয়। পাটের পরিবেশ সহায়ক ধর্মের জন্য যৌথ উপহার দানের ক্ষেত্রে আদর্শ। বয়ন এবং গুচ্ছ করা এবং গাদা করা গালিচা পাটের তৈরী মেঝের আচ্ছাদনে উপাদান হিসাবে থাকে। ভারতবর্ষের দক্ষিণ প্রান্তে 5 – 6 মিটার চওড়া এবং অনবচ্ছিন্ন লম্বায় পাটের মাদুর এবং চাটাই বা দরমা খুব সহজেই বোনা হয়, যেগুলি ঘন এবং শৌখিন রং এ এবং বিভিন্ন বুনন পদ্ধতিতে যেমন –অসম গাঁট সমেত অসম সুতো দিয়ে তৈরী, পানামা এবং হেরিংবোন ইত্যাদি। ভারতবর্ষের কেরালা হইতে বিপুল পরিমাণে পাটের মাদুর এবং কম্বল তৈরী করা হয় হস্ত চালিত এবং শক্তি চালিত উভয় তাঁত এর মাধ্যমে। চিরাচরিত সতরঞ্চি মাদুর গৃহ অলংকরণের জন্য ধীরে ধীরে জনপ্রিয়তা লাভ করছে। বুনন অযোগ্য পাট এবং যৌগিক, তলাচি, মেঝে ঢাকার জন্য মসিনা বা তিসির তেলের প্রলেপযুক্ত একপ্রকার শক্ত কাপড় দিয়ে তৈরী আঁকার জন্য তল এবং আরও অনেক কিছু ব্যবহার করা হয়।গৃহে ব্যবহারযোগ্য কাপড় চোপর এর জন্য পাটের অনেক উপকারীতা আছে, হয় সুতি কাপড়কে বদলে অথবা এর সঙ্গে মিশিয়ে। এটা খুব শক্ত, টেকসই,বর্ণের এবং হালকা –গভীর আঁশ যুক্ত হয় । এর অতি বেগুনী সংরক্ষণ, শব্দ এবং তাপ অন্তরণ, নিচু তাপঘটিত পরিবহণ এবং বিপরীত ধর্মী স্থিতিশীলতা গৃহ অলংকরণের জন্য অভিজ্ঞ পছন্দ তৈরী করেছে। আরও, পাটের আঁশ এর তৈরী জামা কাপড় কার্বন ডাই অক্সাইড নিরপেক্ষ এবং প্রাকৃতিক ভাবে ক্ষয় প্রাপ্ত হওয়ার যোগ্য। এই সমস্ত বিশেষ লক্ষণগুলির জন্যই উচ্চ কার্য সম্পাদন প্রযুক্তিগত বস্ত্র হিসাবে পাটকে ব্যবহার করা যেতে পারে। অধিকন্তু, পাটকে 4 – 6 মাসের মধ্যে বড়ো করা যেতে পারে প্রচুর পরিমানে কাষ্ঠতন্তু সহযোগে যেটা পাটের কান্ড বা পাটকাঠি থেকে উপাদিত হয় এবং পৃথিবীর কাঠের চাহিদার বেশিরভাগটাই মেটাতে পারে। অন্যান্যদের মধ্যে পাট হচ্ছে অধিক গুরুত্বপূর্ণ ফসল যেটা শিল্পায়নের দ্বারা অরণ্যবিনাশ কে সুরক্ষা দিতে সক্ষম।সুতরাং, পাট হচ্ছে সবথেকে বেশী পরিবেশ সহায়ক আঁশ , বীজ থেকে আরম্ভ করে মৃত তন্তু, কারণ মৃত তন্তু একাধিকবার পুনর্ব্যবহারের জন্য প্রক্রিয়াজাত করা যাইতে পারে। কৌশল :-ব্যবহারিক ক্রম হল কৌশল আধুনিকিকরণের উপস্থাপনা এবং দক্ষতার উন্নতি করা এবং কর্মচারীদের উপাদনশীলতা বৃদ্ধি করতে সক্ষম করে তোলা যাতে তাকে সক্ষম করে তোলা যায় তার জীবনের মৌলিক প্রয়োজনগুলি মেটাতে এবং একটা যুক্তিসম্মত সময়ে সে যাতে দারিদ্রের কবল থেকে বেরিয়ে আসতে পারে। কি ভাবে পৌঁছাবেন :- আকাশ পথে :- কোলকাতার বিমানবন্দর দমদমে অবস্থিত, শহরের প্রাণকেন্দ্র থেকে প্রায় 17 কিমি উত্তর পশ্চিমে। বেশীরভাগ স্বদেশী বিমান পরিবহণ ব্যবস্থারই সরাসরি পরিষেবা আছে কোলকাতা হইতে ও কোলকাতাতে ভারতবর্ষের গুরুত্বপূর্ণ শহরগুলিতে যেমন- দিল্লী, মুম্বাই, চেন্নাই, পাটনা, বারাণসী, লখ্নৌ ইত্যাদি। কোলকাতাতে সরাসরি উড়ানের ব্যবস্থা আছে দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশের সঙ্গে। সড়ক ব্যবস্থার মাধ্যমে :- সড়ক পথের মাধ্যমে ভারতবর্ষের বিভিন্ন শহরের সঙ্গে কোলকাতা সংযুক্ত। শহরের কেন্দ্রবিন্দুতে অবস্থিত এসপ্ল্যানেড (ধর্মতলা) প্রান্তিক কেন্দ্রই বাস পরিষেবার প্রধান প্রান্তিক কেন্দ্র। ঢাকা – কোলকাতা বাস পরিষেবা শুরুই হল নূতন উন্নয়ন। বাসগুলি বর্ণাঢ্য, শীততাপ নিয়ন্ত্রিত ও আরামদায়ক। রেল পথের মাধ্যমে :- এই শহরে দুটি গুরুত্বপূর্ণ রেল স্টেশন আছে—একটা হাওড়ায় ও অন্য একটা শিয়ালদহতে। দেশের অন্যান্য প্রান্ত হইতে রেল যোগযোগের মাধ্যমে কোলকাতাকে সংযুক্ত করেছে। অত্যুত্তম দ্রুতগামী ট্রেন যেমন –রাজধানী এক্সপ্রেস এবং শতাব্দী এক্সপ্রেস এই শহরকে দিল্লীর সঙ্গে সংযুক্ত করেছে এবং কাছাকাছি শহরগুলিকে যেমন বোকারো এবং রাউরকেল্লা। করমন্ডল এক্সপ্রেস ও গীতাঞ্জলী এক্সপ্রেস কোলকাতাকে যুক্ত করেছে যথক্রমে চেন্নাই ও মুম্বাই এর সঙ্গে।