একটি দল বা গুচ্ছনিরূপিত হয় ভৌগলিক সমাবেশ বা কেন্দ্রীকরণ হিসাবে(একটি মহানগরী/ শহর / কিছু সংলগ্ন গ্রামসমূহ এবং তাদের সন্নিহিত অঞ্চলসমূহ) যা কাছাকাছি একই ধরণেরউপাদানের দ্রব্য উৎপন্ন করছেন এবং মুখোমুখি হচ্ছেন যৌথ সুযোগ সুবিধার ও আশঙ্কার। একটি কারুশিল্পী দল নিরূপিত হয় ভৌগলিক দিক থেকে কেন্দ্রীভূত (প্রধানত গ্রামগুলিতে/ছোট শহরগুলিতে) পরিবার পরিজনের দল যারা হস্তশিল্পের / হস্ত চালিত তাঁতের উৎপাদিত দ্রব্য সমূহ উৎপাদন করছেন। একটি বৈশিষ্ট্য সূচক দলে এইরকম উৎপাদকরা প্রায়ই ঐতিহ্যবাহী সম্প্রদায়ের অন্তর্ভূক্ত হন, যাহারা বংশানুক্রমে স্বীকৃত দ্রব্য উৎপাদন করছেন। বস্তুত, অনেক কারুশিল্পী দল হলেন শতাধিক বছরের পুরনো কারুশিল্পী।দরিয়াপুর দল সম্বন্ধীয় :- দরিয়াপুর দল পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের বীরভূম জেলাতে পড়ে। বোলপুর দলটি 400'র বেশী কারুশিল্পী দল এবং 25 টি সয়ম্ভর গোষ্ঠী গঠন করতে সক্ষম হয়েছেন যারা এই শিল্পে নিযুক্ত শ্রমিক দলকে চালু রাখতে সাহায্য করছেন। গতিশীলতার চালিকাশক্তি দিনে দিনে বৃদ্ধি পাচ্ছে।হস্ত মুদ্রিত :- রেজিস্ট পদ্ধতি যাহা দাবু (ডাবু) নামে পরিচিত, রজনের সঙ্গে মোম অথবা আঠার কাদা মিশিয়ে সম্পৃক্ত করে এখানে ব্যবহৃত হয়। ব্রাশ অথবা ব্লক (বড়ো ও নিরেট কাঠের টুকরো)এর সাহায্যে অথবা হাত দিয়ে কাপড়ের বিভিন্ন জায়গায় লাগানো হয়। তারপর এর উপরে রং লাগানো হয়। তারপর গরম জলে বা প্রবহমান জলে মোম ধুয়ে ফেলা হয় এবং তখন প্রয়োগ করা রং এই জায়গাগুলিতে এসে যায় একটা বিক্ষিপ্ত প্রভাব দিতে। এই পদ্ধতি কিছুটা হলেও বাটিক পদ্ধতির সঙ্গে সমতুল্য। যেখানে কাপড়ের মূল রং বা আসল রং বজায় রাখা হয় সেখানে বর্তমানে ব্লক ছাপানো বা ব্লক প্রিন্টিং করা হয়। বৈসাদৃশ্য রং এর বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট রুপরেখা বা কারুকাজে ছাপিয়ে বস্ত্র কে তাৎপর্য্যপূর্ণ করা হয়। যখনই রেজিস্ট ধুয়ে ফেলা হয় তখনই মোম ব্যাবহারের ফলে ছিদ্রপথে রং প্রবিষ্ট হওয়ার জন্য সামগ্রিক নকশা বাটিক এর মত ভাঙা ভাঙা চেহারার রুপ নেয়। বেগুনী রং এ ছোট চৌবুন্দি ছাপা বীরভূম এ বিখ্যাত। মহিলাদের খাটো চান্দেরী চাদর এবং দোপাট্টা, মঙ্গলগিরি শালোয়ার স্যুট এবং শাড়ী, মহেশ্বরী শালোয়ার স্যুট এবং শাড়ী, তসর শালোয়ার স্যুট এবং শাড়ী, জর্জেট শাড়ী, শিফন শাড়ী, খাদি সুতিতে ছাপানো কাপড় এবং খাদি রেশম, ভয়েলে এবং চাদরে ছাপানো সুতি। বেশীরভাগ ক্ষেত্রেই জামদানি বোনা হয় হালকা রং এর পটভূমিতে সাদা, মেরুন, কালো, সবুজ, সোনালী, রুপালী রং এর নকশায় এবং সোনালী রং এর মুগা রেশম এ।জামদানি এবং টাঙ্গাইলের মধ্যে বাড়তি ওজনের নকশার কাজের জন্য বোনার কৌশলে একটা প্রধান পার্থক্য আছে; জামদানিতে সূচীশিল্পের সুতো অলংকৃত অংশে প্রতিটা ফোঁড় এর পরে ঢোকানো হয় কিন্তু টাঙ্গাইলের ক্ষেত্রে সূচীশিল্পের সুতো অলংকৃত অংশে প্রতি দুটো ফোঁড় এর পর ঢোকানো হয়। টাঢ্গাইলের মূল বৈশিষ্ট্য হল বাড়তি ওজনের বুটি, ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র শিল্পকর্মের প্রধান বৈশিষ্ট্য পুরো জমিতে পুনরাবৃত্তি করা হয়।চিরাচরিত রীতি অনুযায়ী জামদানিগুলি সাদার উপরে ফ্যাকাশে সাদা দিয়ে কারুকার্য্য করে বুনন করা হয়। ঐতিহ্যবাহী জামদানি শাড়ীগুলি জ্যামিতিক নকশায় এবং সুতির টাঢ্গাইল অত্যন্ত জনপ্রিয় এবং পশ্চিম বাঙলার আদি তাঁতিরা এই শাড়ী এখনও বুনে থাকেন। হালকা হওয়ার কারণে, দৈনন্দিন পড়ার জন্য বা ব্যাবহারের জন্য ভারতবর্ষের মত গ্রীষ্ম প্রধান দেশে এই শাড়ী অপূর্ব।ব্যবহৃত কাঁচা মাল :- যে কোন খুব সরু আঁশ, তন্তু অথবা যেটাতে বস্ত্র অথবা কাপড় তৈরী করা যায় এবং ফল প্রাপ্তির উপাদান স্বয়ং। তাঁতে বুনন বস্ত্রের ক্ষেত্রে 'আদিতে' শব্দটি উল্লিখিত কিন্তু বর্তমানে বুনন, সংযুক্ত, পশম কে চাপের মধ্যে ঠেসে সমান করা কাপড় এবং গুচ্ছবদ্ধ পালকের বস্ত্রও অন্তর্ভুক্ত। বস্ত্রবয়ন উৎপাদনে যে সমস্ত প্রাথমিক কাঁচামাল ব্যবহৃত হয় সেগুলি হল তন্তু, হয় প্রাকৃতিক উৎস থেকে প্রাপ্ত (যথা- পশম) অথবা রাসায়নিক পদার্থ থেকে উৎপাদিত (যেমন- এবং পোষাকের জন্য প্রয়োজনীয় কৃত্রিম তন্তুবিশেষ)। বস্ত্র শিল্পকে শ্রেণী বিন্যাস করা হয়েছে তাদের তন্তুর উপাদান স্বরুপ যেমন - রেশম, পশম, পাট বা শণের কাপড়, সুতি, এরকম সংশ্লেষী আঁশ রেয়ন বা সেলুলোজ থেকে তৈরী রেশম সদৃশ পদার্থ হিসাবে। প্রক্রিয়া :- কাপড় হাতে ছাপানো হচ্ছে একটা প্রক্রিয়া বা পদ্ধতি যেখানে কাপড়ে রং প্রয়োগ করা হব একটি সুনির্দিষ্ট নকশার উপর অথবা চিত্রলেখার উপর ভিত্তি করে। যথাযথ ভাবে ছাপানো কাপড়ে রং সংযুক্ত হয় এমনভাবে যাতে ধোওয়া এবং ঘর্ষণ হয় । কাপড় ছাপানো রং করার সঙ্গে সম্পর্কিত কিন্তু বস্ত্রে রং করার ক্ষেত্রে সমগ্র বস্ত্রখন্ডটি একই ভাবে একটা মাত্র রং দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়, ছাপানোতে এক বা একাধিক রং প্রয়োগ করা হয় কেবলমাত্র কিছু কিছু জায়গায় এবং সুস্পষ্টভাবে নিরুপিত নকশায়। ছাপানোর কাজে, কাঠের ব্লক, লেখার জন্য ধাতব কার্ডবোর্ড (ষ্টেনসিল), খোদাই করা থালা বা প্লেট, মর্দন করার ভারী যন্ত্র বা রোলার অথবা রেশমের পর্দা (সিল্ক স্ক্রিন) ব্যবহার করা হয় বস্ত্রের উপর রং ধরাণোর জন্য। ছাপানোর সময়রং করার যে পদার্থ ব্যবহার করা হয় তাতে ঘন রং থাকে যাতে কৈশিক আকর্ষনের জন্য নকশা বা রুপরেখা সীমার বাইরে রং ছড়ানো রোধ করা যায়। চিরাচরিত কাপড় ছাপানোর পদ্ধতি সাধারণভাবে বা বিস্তারিতভাবে চারটি রীতিতে শ্রেণীবিভক্ত করা যাইতে পারে।
রেজিস্ট এবং তরল পদার্থ বেরিয়ে যায় এরকম ধরণের ছাপানোর প্রক্রিয়া ঊনিশ শতকে বিশেষ করে কেতাদুরস্ত ছিল, সংযুক্তি পদ্ধতি যেখানে বেগুনী রেজিস্ট ব্যবহার করা হত অন্যান্য রং এর ব্লক প্রিন্টিং এ নীল পটভূমি তৈরী করার জন্য। বেশীরভাগ আধুনিক শিল্পসমৃদ্ধ ছাপা সরাসরি ছাপা পদ্ধতি ব্যবহার করে। 1) পর্দার সৃষ্টি - স্টেইনলেস স্টিল কাঠামোর উপর মহিলাদের সূক্ষ্ম কৃত্রিম তন্তু বিশেষের তৈরী জালি কাপড় শক্ত করে টেনে বেঁধে পর্দা তৈরী করা হয়। কৃত্রিম তন্তু বিশেষের তৈরী কাপড়টি একটি হালকা সংবেদনশীল ক্রীমযুক্ত তৈলাক্ত তরল পদার্থ দ্বারা আস্তরণ দেওয়া হয়, এটা অঙ্কণ এর উপর স্থাপন করা হয়, আলো নিরোধক কালি থেকে তৈরী করা, তারপর এটাকে আলোতে অনাবৃত করা একটা 'বিপরীত' প্রতিবিম্ব পাওয়ার জন্য। পরিণতি হল একটা পর্দা, যেটা যখন কালি দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়, অঙ্কন অনুযায়ী কেবলমাত্র কালিকেই ভেদ করতে দেবে। 2) সংমিশ্রন এবং কালির প্রলেপ। 3) কাপড়কে ছাপানোর টেবিলে পিন দিয়ে আটকানো। 4) কাপড় ছাপানো - যে তলের উপর ছাপানো বা আঁকা হবে তার উপর পর্দাটাকে বিছানো হয় এবং কালিকে পর্দার উপর আড়াআড়িভাবে ছড়িয়ে ছিটিয়ে দেওয়া হয় যাতে কালি প্রবেশ করতে পারে বা প্রবাহিত হতে পারে। 5) কাপড়কে শুকানো।কৌশল :- এই কৌশল, অভিপ্রেত নকশাটি পূর্ব সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ক্ষুদ্র বিন্যাসে যে তলের উপর পর্দা বিছানো হবে তার পৃষ্ঠভাগে পৃথক পৃথক রং সহযোগে যেগুলো বিশেষ তরল রঞ্জক, ছোট ছোট রং এর ফোঁটা প্রক্ষেপ করেতৈরী করা হয়। এইগুলি একদম শুরুর দিকের ছাপানোর আকার , কাপড়ের আলংকারিক মূল্য বৃদ্ধির জন্য ব্যবহার করা হত। এটাই বাঁধা এবং রং করার চিরাচরিত কৌশল। কণবর্ষী যন্ত্র ব্যবহার করা হয় রং কে বল প্রয়োগের দ্বারা পর্দার মাধ্যমে পাঠানোর জন্য এবং তড়িতাচ্ছাদন ব্যবহার করা হয় অঙ্কিত ভেলভেটের কোমল আস্তরণ প্রয়োগ করার জন্য। এই পদ্ধতি অন্তর্ভুক্ত করে মোড়ানো এবং ভারী সুতোকে একসঙ্গে বাঁধবার জন্য যেখানে আসল রং বজায় রাখার এবং তারপর রং করার প্রয়োজন আছে।কি ভাবে পৌঁছাবেন :-আকাশ পথে :- বর্ধমান থেকে নিকটতম বিমানবন্দর হচ্ছে কোলকাতার নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসু আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর। এই জায়গা থেকে বিমানবন্দরটি প্রায় 160 কিমি দূরে অবস্থিত এবং ভারতের গুরুত্বপূর্ণ গন্তব্যস্থলগুলির চাহিদা পূরণ করে, কিছু আন্তর্জাতিক জায়গা ব্যাতিরেকেও। কোলকাতা বিমানবন্দর থেকে, বর্ধমানে পৌঁছানোর জন্য আপনাকে ব্যাক্তিগত ট্যাক্সি অথবা বাস চাপতে হবে। সড়ক ব্যবস্থার মাধ্যমে :- জেলার সড়ক সংযোজকতা খুবই ভাল। আন্ত:রাজ্য বাস পরিষেবা শহর কে যোগ করেছে, ভারতবর্ষের মুখ্য গন্তব্যস্থলগুলির সাথে, নিয়মিত ভাবে। ভালভাবে রক্ষণা বেক্ষণ করা চার ভাগের জি.টি.রোড আছে তাদের জন্য যারা নিজেদের গাড়িতে করে গাড়ি চালিয়ে বিভিন্ন জায়গায় যেতে চান। রেল পথের মাধ্যমে :- বর্ধমান জেলার মধ্যে দিয়ে অসংখ্য ট্রেন যায়। হাওড়া-দিল্লী লাইন এর উপর দিয়ে গিয়েছে। রেলপথের মাধ্যমে এই জায়গার অবিরাম সংযোজকতা আছে, যেহেতু রাজ্যের এটা গুরুত্বপূর্ণ রেলের মাথা।